মাদারীপুরের যুবক রাকিব মহাজন লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে বন্দি হয়ে জীবন হারালেন। উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় এক বন্দিশালায় তিন মাস ধরে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু হয় তার। রাকিবের পরিবার একাধিকবার মুক্তিপণ দিলেও, অবশেষে তার জীবন রক্ষা করা যায়নি।
রাকিবের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবার শোকাহত হয়ে পড়ে এবং সরকারের সহযোগিতা চেয়ে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছে। পরিবারের সদস্যরা দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
রাকিবের বাবা নাজিম উদ্দিন মহাজন জানান, তিন বছর আগে দরিদ্রতা থেকে মুক্তির আশায় ছেলে রাকিব বাড়ি ছাড়েন। কিন্তু দালালদের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে বন্দি হন। একাধিকবার মুক্তিপণ দিলেও রাকিবকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। দালালদের প্রলোভনে পড়ে রাকিবকে প্রথমে ২৭ লাখ টাকায় ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয়, পরে তাকে বিক্রি করা হয় আরো একটি দালাল চক্রের কাছে। এতে আরও ১৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়। পরে খাবার না দেওয়ায় রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাকিবের মা হাসিনা বেগম বলেন, "আমরা ২৭ লাখ টাকা দিয়েও তাকে ইতালি পাঠাতে পারেনি, পরে আবার আরও ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত দালালদের নির্যাতনে আমার ছেলেকে হারিয়েছি।"
এদিকে, মাদারীপুরের পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা জানিয়েছেন, রাকিবের পরিবার যদি লিখিত অভিযোগ দেয়, তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসন জানায়, রাকিবের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।